নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সার্বজনীন বাংলা বর্ষবরণ ও মঙ্গল শোভাযাত্রা
- যুক্তরাষ্ট্র
- 1 minute read
বাংলা পঞ্জিকার প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ বাঙালি জাতির ঐতিহ্যবাহী বর্ষবরণের দিন। এটি বাঙালিদের একটি সর্বজনীন লোকউৎসব হিসাবেও বিবেচিত। পুরনো বছরের অপ্রাপ্তি, গ্লানি, ব্যর্থতা ভুলে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় নতুন উদ্যোমে বরণ করে নেওয়া হয় নতুন বছরকে। গ্রাম বাংলার মানুষ সাধ্যমতো ভাল খাবার খেয়ে, ভালো পোশাক পরে শুরু করতে চায় বছরের প্রথম দিনটি। মানুষ বিশ্বাস করে বছরের প্রথম দিনটি ভাল হলে সারা বছরও ভাল কাটবে। কোথায়ও কোথাও আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার। উদ্দেশ্য একটাই কর্মময় জীবনে আনন্দের আবহ সৃষ্টি করা।
পহেলা বৈশাখের অন্যতম আনন্দ আয়োজন মঙ্গল শোভাযাত্রা, যেটি শুধু বাঙালি সংস্কৃতি নয়, ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্যেরও অংশ। বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যেখানে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক উৎসবের বাঁক বদলের চেষ্টা চলছে, সেখানে বহু সংস্কৃতির মিলনমেলা নিউ ইয়র্কে সার্বজনীনভাবে উদযাপিত হচ্ছে ‘বাংলা বর্ষবরণে ও মঙ্গল শোভাযাত্রা ১৪৩২’।
‘অশুভের দুয়ারে শুনি জনতার রণধ্বনি’ থিম নিয়ে আগামী ১৩ এপ্রিল, রবিবার, নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে সার্বজনীন মঙ্গল শোভাযাত্রা হতে যাচ্ছে । সম্মিলিত বর্ষবরণ মঙ্গল শোভাযাত্রা উদযাপন পরিষদ নিউ ইয়র্ক এর আয়োজনে বাংলা বর্ষবরণ ও শোভাযাত্রায় প্রায় ত্রিশটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও আঞ্চলিক সংগঠন অংশ গ্রহণ করছে।
প্রস্তুতির অংশ হিসেবে প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদউল্লাহকে সভাপতি মন্ডলীর সভাপতি, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কন্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায়কে আহবায়ক ,সাগর লোহানীকে যুগ্ম আহ্বায়ক, মুজাহিদ আনসারীকে সদস্য সচিব, সনজীবন কুমারকে যুগ্ম সদস্য সচিব ও রাশেদ আহম্মেদকে প্রধান ব্যবস্থাপক করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট উদযাপন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গত ২৩ মার্চ, রবিবার, রাত ৮ টায় জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন রেষ্টুরেন্টে কমিটির নাম ঘোষণা করেন কমিটির আহবায়ক রথীন্দ্রনাথ রায়। সভায় নতুন কমিটির পরিচয় পর্বের পাশাপাশি প্রস্ততির নানান দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের কন্ঠযোদ্ধা শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায়ের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মুজাহিদ আনসারীর সঞ্চালনায় উক্ত আলোচনায় অংশ নেন প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ, সাপ্তাহিক ঠিকানার প্রধান সম্পাদক মুহম্মদ ফজলুর রহমান, চ্যানেল আই এর উত্তর আমেরিকা প্রধান রাশেদ আহমেদ, নটরডেম কলেজের সাবেক অধ্যাপক হোসনে আরা, মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ, ফারুক হোসাইন, সুব্রত বিশ্বাস, আলী হাসান কিবরিয়া অনু, নাট্য ব্যক্তিত্ব শামসুল আলম বকুল, এক্টিভিস্ট গোপাল সান্যাল, বাচিক শিল্পী মিথুন আহমেদ, কন্ঠশিল্পী শাহ মাহবুব, সাগর লোহানী, সঞ্জীবন সরকার, জাকির আহমেদ রনি, ওবায়দু্লাহ মামুন, জাকির হোসেন বাচ্চু, সাবিনা হাই উর্বি, ক্লারা রোজারিও, সংগীত শিল্পী মনিকা রায়, সৈয়দ মিজানুর রহমান, কল্লোল দাস, দিলিপ মোদক, আশিস রায়, রামদাস ঘরামি, হিরো চৌধুরী, তুহিন মাহফুজ, আব্দুল হামিদ, কাজল মাহমুদ, রাজিব আহসান, বিপুল দাস এবং সাপ্তাহিক বাঙালীর বিশেষ প্রতিনিধি ও নিউইর্য়ক ভয়েজ ২৪ এর সম্পাদক আসলাম আহমাদ খান।
সভায় ১৩ এপ্রিল বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিভিন্ন উপ-কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বক্তারা বলেন, বাংলা সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশে যখন আবহমান বাংলা সংস্কৃতির কন্ঠরুদ্ধ করার অপচেষ্টা চলছে, সেখানে নিউইয়র্কে এই প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সার্বজনীন মঙ্গল শোভাযাত্রা, যে শোভাযাত্রার মাধ্যমে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা হবে সমৃদ্ধ বাঙালি সংস্কৃতির বৈচিত্রময় রূপ। বাঙালির শিকড়ের এই আনন্দ আয়োজনকে সুন্দর ও সফলভাবে সম্পন্ন করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়।