ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে প্রত্যক্ষ আলোচনায় আগ্রহী পুতিন: ১৫ মে বৈঠকের প্রস্তাব
- আন্তর্জাতিক
- 1 minute read
তিন বছর ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। অবশেষে ইউক্রেনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ আলোচনা করতে চায় রাশিয়া। রোববার (১১ মে) এক বিবৃতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানান, তার দেশ কোনও পূর্বশর্ত ছাড়া কিয়েভের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। আলোচনার স্থান হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে তুরস্কের ইস্তানবুল। সম্ভাব্য এই বৈঠক আগামী ১৫ মে অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ক্রেমলিন থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে পুতিন বলেন, “আমরা ইউক্রেনকে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দিচ্ছি। উদ্দেশ্য ক্ষণস্থায়ী সমঝোতা নয়, বরং যুদ্ধের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করে স্থায়ী ও টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।” তিনি আরও বলেন, “বল এখন কিয়েভের কোর্টে। তারা কি দেশের স্বার্থে কাজ করবে, নাকি কেবল তাদের পৃষ্ঠপোষকদের স্বার্থ রক্ষা করবে—এটাই দেখার বিষয়।”
মস্কো জানিয়েছে, সম্ভাব্য বৈঠকের বিষয়ে তারা খুব দ্রুত তুরস্কের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ করবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এ আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির পথও তৈরি হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন পুতিন।
রাশিয়ার এই প্রস্তাবে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ লেখেন, “পুতিনের প্রস্তাব শান্তির দিকে বড় এক ধাপ। এটি ইউক্রেন ও রাশিয়ার জন্য সেরা একটি দিন হতে পারে। আলোচনা সফল হলে হাজারো মানুষের জীবন বাঁচবে।”
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই প্রস্তাবের বিষয়ে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াতে গতকাল এক বৈঠকে পুতিনকে ৩০ দিনের মধ্যে যুদ্ধবিরতির জন্য সম্মতি জানানোর আহ্বান জানান। না হলে রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে পুতিন বলেন, “এর আগেও বহুবার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিলাম। ইস্টার সানডে, জ্বালানি স্থাপনায় হামলা না করার প্রতিশ্রুতি এবং ৮ থেকে ১১ মে পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টার অস্ত্রবিরতির কিছুই ইউক্রেন সম্মান করেনি। সুতরাং ক্ষণস্থায়ী বিরতিতে রাশিয়ার আর আগ্রহ নেই, আমরা চাই স্থায়ী শান্তি।”
তুরস্কে প্রস্তাবিত এই বৈঠক ইউক্রেন যুদ্ধের গতি পাল্টে দিতে পারে। তবে বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব হবে, তা নির্ভর করছে ইউক্রেনের প্রতিক্রিয়া ও পশ্চিমা বিশ্বের ভূমিকায়। আন্তর্জাতিক মহলের নজর এখন কিয়েভ ও ইস্তানবুলের দিকে।