ইইউ প্রধানের প্রত্যয়— ‘স্বাধীন ইউরোপ’ গড়ার আহ্বান

ইইউ প্রধানের প্রত্যয়— ‘স্বাধীন ইউরোপ’ গড়ার আহ্বান


আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অস্থিরতা ও শক্তির ভারসাম্যে ব্যাপক পরিবর্তনের এ সময়ে ‘স্বাধীন ইউরোপ’ গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন। গতকাল বৃহস্পতিবার জার্মানির ঐতিহাসিক শহর আখেনে আন্তর্জাতিক শার্লেমেন পুরস্কার গ্রহণকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

পুরস্কার গ্রহণের ভাষণে ভন ডার লেন বলেন, “বিশ্ব এখন আবার সাম্রাজ্যবাদী উচ্চাশা ও যুদ্ধের ছায়ায় ঢেকে যাচ্ছে। ইউরোপকে নিজস্ব নেতৃত্বে, নিজস্ব দায়িত্বে একটি ‘সত্যিকারের স্বাধীন’ ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে।”

তিনি একবিংশ শতাব্দীর জন্য একটি নতুন ইউরোপীয় শান্তিব্যবস্থা— প্যাক্স ইউরোপিয়া— গড়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তাঁর মতে, “আমরা আর কেবল শান্তির সুবিধাভোগী হয়ে থাকতে পারব না। ইতিহাস দ্বিধা বা বিলম্বকে ক্ষমা করে না।”

রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপের নিরাপত্তা কাঠামোতে আমূল পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে ভন ডার লেন বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটোর যে নিশ্চিন্ততা ছিল, তা ভেঙে গেছে। এখন ইউরোপের উচিত নিজেদের নিরাপত্তা নিজেদের হাতে তুলে নেওয়া।”

তিনি আরও জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো ইতিমধ্যেই প্রতিরক্ষা খাতে শত শত বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করছে। “আমরা এই বিনিয়োগ করছি শান্তিকে রক্ষা করার জন্য আমাদের সর্বোচ্চটা দেওয়ার উদ্দেশ্যে,” বলেন ইইউ প্রধান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “জার্মানি একটি শক্তিশালী, ঐক্যবদ্ধ ইউরোপের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” তিনি জানান, আসন্ন ন্যাটো সম্মেলনে জার্মানি এমন সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত, যা ইউরোপের নিরাপত্তায় তার অগ্রণী ভূমিকা স্পষ্টভাবে তুলে ধরবে।

উল্লেখ্য, আখেনের আন্তর্জাতিক শার্লেমেন পুরস্কার ১৯৫০ সাল থেকে ইউরোপীয় ঐক্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়ে আসছে। এর আগে এই পুরস্কার পেয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ও প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিস।