মার্কো-জেডির ৪৮ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি
- আন্তর্জাতিক
- 2 minutes read
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের টানা ৪৮ ঘণ্টার কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় ভারত ও পাকিস্তান পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় অর্জিত এই চুক্তির ফলে দীর্ঘদিনের সামরিক উত্তেজনা প্রশমিত হলো দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশের মধ্যে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ দেওয়া এক পোস্টে মার্কো রুবিও নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি লেখেন,
“গত ৪৮ ঘণ্টায় আমি ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান অসিম মুনীর এবং ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করেছি।”
রুবিও আরও বলেন, “আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি, ভারত ও পাকিস্তান তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং একটি নিরপেক্ষ স্থানে বিভিন্ন ইস্যুতে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শান্তির পথ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে দুই দেশের নেতৃত্বের প্রজ্ঞা ও রাষ্ট্রনায়কত্ব প্রশংসনীয়।”
এই ঘোষণার কিছুক্ষণ আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল-এ লিখেন: “যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ আলোচনার পর, ভারত ও পাকিস্তান অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। শুভ বুদ্ধির ব্যবহার করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানোয় উভয় পক্ষকে অভিনন্দন।”
ট্রাম্পের ঘোষণার পরপরই ভারত ও পাকিস্তান দুই পক্ষ থেকেই যুদ্ধবিরতির বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি জানান, “শনিবার বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে পাকিস্তানি ডিজিএমও ভারতীয় পক্ষের ডিজিএমও-কে ফোন করেন। এরপর দুই পক্ষ আলোচনা করে ভারতীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে জল, স্থল ও আকাশপথে সব ধরনের সামরিক কর্মকাণ্ড বন্ধে একমত হয়।”
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার এক্সে দেওয়া এক বার্তায় বলেন, “পাকিস্তান ও ভারত অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। আমরা সবসময় এ অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার পক্ষে থেকেছি, তবে সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতার প্রশ্নে কোনো আপোস করিনি।”
যুদ্ধবিরতির পরপরই পাকিস্তানের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে যে, দেশটির আকাশসীমা পুনরায় বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত মাসে কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং ‘অপারেশন সিনদুর’ নামে সীমান্তপারে সামরিক অভিযান শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় যুদ্ধের আশঙ্কা প্রবল হয়ে ওঠে, যা শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে উপনীত হলো।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই চুক্তি শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, বরং বৈশ্বিক শান্তির ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক বার্তা।