বিদেশে শাখা খোলার সুযোগ শুধুমাত্র ‘ভালো ব্যাংক’গুলোকে: বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নীতিমালা
- অর্থনীতি
- 2 minutes read
বাংলাদেশ ব্যাংক বিদেশে দেশীয় ব্যাংকের শাখা, প্রতিনিধি অফিস বা সহযোগী কোম্পানি স্থাপন সংক্রান্ত কার্যক্রমে নতুন নীতিমালা জারি করেছে। গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) জারি করা এ প্রজ্ঞাপনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, কেবলমাত্র অভিজ্ঞ, আর্থিকভাবে শক্তিশালী এবং নিয়মানুবর্তী ব্যাংকগুলোই দেশের বাইরে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি পাবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশের বিশ্ববাজারে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের ফলে অনেক ব্যাংক ২০০১ সাল থেকেই বিদেশে শাখা ও এক্সচেঞ্জ হাউস স্থাপন করে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের সেবা দেওয়ার পাশাপাশি বৈদেশিক বাণিজ্য লেনদেন সম্পন্ন করে থাকে। তবে সময়ের পরিবর্তনে ব্যাংক খাতের সংখ্যা ও পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বৈশ্বিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার প্রেক্ষাপটে নীতিমালায় পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
কঠোর যোগ্যতা ও শর্তাবলি:
নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, বিদেশে কার্যক্রম চালাতে হলে—
-
সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কমপক্ষে ৭ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
-
বাংলাদেশ ব্যাংকের রেটিংয়ে ‘শক্তিশালী’ বা ‘সন্তোষজনক’ মান থাকতে হবে।
-
ব্যাংকটি অবশ্যই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ‘এ’ ক্যাটাগরির হতে হবে।
-
প্রস্তাবিত দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক থাকতে হবে।
ব্যবস্থাপনা ও মানবসম্পদ সংক্রান্ত নির্দেশনা:
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, বিদেশে শাখা খোলার ক্ষেত্রে—
-
সংশ্লিষ্ট দেশের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের অনুমোদন থাকতে হবে।
-
কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চসংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিককে নিয়োগ দিতে হবে।
-
তাদের আয় দেশে পাঠানোর সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে এবং সেটি সংশ্লিষ্ট দেশের নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
অতিরিক্ত নির্দেশনা:
বিদেশে এক্সচেঞ্জ হাউস স্থাপনের ক্ষেত্রে অভিবাসী বাংলাদেশিদের সংখ্যা ও প্রবাসী আয়ের পরিমাণ বিবেচনায় নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বিদেশে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আবেদনকারী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন আবশ্যক।
বিদেশে স্থাপিত শাখা বা সহযোগী কোম্পানির অর্জিত নিট মুনাফা দেশে প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে, এবং তাদের দৈনন্দিন ব্যয় পরিচালনা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকেই নির্বাহ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই পদক্ষেপের ফলে দুর্বল ও অনিয়মে জর্জরিত ব্যাংকগুলোর জন্য বিদেশে কার্যক্রম পরিচালনায় বড় বাধা সৃষ্টি হলো। আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা ও নিয়ন্ত্রণ জোরদারের অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক বলছেন অর্থনীতিবিদরা।