নগর ভবনে ইশরাক সমর্থকদের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, সাংবাদিক হেনস্তার অভিযোগ

নগর ভবনে ইশরাক সমর্থকদের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, সাংবাদিক হেনস্তার অভিযোগ

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে ইশরাক হোসেন সমর্থিত জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুর ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে দু’পক্ষের অনুসারীরা একে অপরের লোকজনকে চিহ্নিত করে গণপিটুনি দিতে শুরু করে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান প্রিন্স তার অনুসারীদের নিয়ে নগর ভবনে প্রবেশের সময় সংঘর্ষ শুরু হয়। তখন তার প্রতিপক্ষ ও সংগঠনের সভাপতি আরিফ চৌধুরীর সমর্থকেরা বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও হাতাহাতি হয়।

সন্দেহে গণপিটুনি, পুলিশ উদ্ধার

দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের দিকে নগর ভবনের একজন কর্মীকে আরিফুজ্জামান প্রিন্সের অনুসারী সন্দেহে বেদম মারধর করা হয়। আক্রান্ত ব্যক্তি প্রশাসন শাখার কম্পিউটার অপারেটর শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে গেলে উত্তেজিত ইশরাক সমর্থকরা তাকে পুলিশের কাছে দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

পরে আরেকজনকেও প্রিন্সের অনুসারী সন্দেহে মারধর করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দু’জনকেই উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

পক্ষগুলোর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

এ বিষয়ে আরিফুজ্জামান প্রিন্স বলেন, “ইশরাক হোসেন নগর ভবনে নাগরিক সেবা চালু করার ঘোষণা দেওয়ার পর প্রতিদিন কিছু বহিরাগত এসে কর্মচারীদের হুমকি দিচ্ছেন। আজ আমরা একসঙ্গে প্রবেশ করার সময় হামলার শিকার হই।”

অন্যদিকে আরিফ চৌধুরী দাবি করেন, “আমরা প্রতিদিনের মতো শান্তিপূর্ণভাবে ভবনে অবস্থান করছিলাম। কিন্তু বহিরাগতরা এসে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমাদের অন্তত আটজন গুরুতর আহত হন।”

সাংবাদিকদের হেনস্তা, ছুরি দেখিয়ে হুমকি

সংঘর্ষের ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকরাও হামলার শিকার হন।  রিপোর্টার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান শিশির অভিযোগ করেন, “সংঘর্ষের সময় ভিডিও ধারণ করছিলাম। হঠাৎ একদল লোক এসে আমার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং সব ছবি ও ভিডিও ডিলিট করে। এরপর ছুরি দেখিয়ে হুমকি দেওয়া হয়—এ ধরনের সংবাদ যেন না করি।”

 রিপোর্টার নাজিবুর রহমান জানান, “আমার ক্যামেরাম্যানসহ আমাকে ভিডিও না করতে হুমকি দেওয়া হয়েছে।”

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা

সংঘর্ষের পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহতদের উদ্ধার করে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়েছে কি না—সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানা যায়নি।