হাইতিতে অপরাধচক্রের নৃশংসতার বলি প্রায় ৫ হাজার: জাতিসংঘ

হাইতিতে অপরাধচক্রের নৃশংসতার বলি প্রায় ৫ হাজার: জাতিসংঘ

ক্যারিবীয় অঞ্চলের দ্বীপ রাষ্ট্র হাইতিতে সংঘবদ্ধ অপরাধীদের সহিংসতা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত এক বছরে অপরাধচক্রের নৃশংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৫ হাজার মানুষ, জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এর বরাতে এ তথ্য উঠে এসেছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা (ওএইচসিএইচআর) শুক্রবার (১১ জুলাই) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানায়, গত অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত হাইতিতে ৪,৮৬৪ জন নিহত হয়েছেন। রাজধানী পোর্ট-আউ-প্রিন্স ও আশপাশের এলাকাগুলোতেই সহিংসতা সবচেয়ে বেশি।

‘রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ নেই’
প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের হাইতিস্থ আবাসিক প্রতিনিধি ও মানবিক সমন্বয়ক উলরিকা রিচার্ডসন বলেন,

“রাজধানীর বাইরের অনেক অঞ্চলে রাষ্ট্রের কার্যকর উপস্থিতি নেই। সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ভয়ানক হারে ঘটছে।”

উল্লেখ্য, প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার হাইতিতে গ্যাং সদস্যদের তাণ্ডবে লাখ লাখ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। সহিংসতার জেরে হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

অসহায় স্বাস্থ্যখাত ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সংকট
অপরাধীদের দখলদারির ফলে দেশের নিরাপত্তা বাহিনী রীতিমতো কোণঠাসা। একইসঙ্গে বাধ্য হয়ে অনেক আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা হাইতিতে তাদের কার্যক্রম সীমিত করে ফেলেছে।

দেশটির গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর অবস্থাও উদ্বেগজনক। ইউনিভার্সিটি হসপিটাল অব মিরেবালাইজ-সহ একাধিক হাসপাতাল আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে তাদের সেবা বন্ধ রেখেছে।

জাতিসংঘের হিসাবে, রাজধানী ও আশপাশে মাত্র ২৫ শতাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্র সচল, যা হাইতির আগেই নাজুক স্বাস্থ্যখাতকে আরও সংকটে ফেলেছে।

আঞ্চলিক অস্থিরতার ঝুঁকি
প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়, হাইতির বর্তমান সহিংস পরিস্থিতি কেবল দেশীয় নয়, বরং আঞ্চলিক অস্থিরতার ঝুঁকি তৈরি করছে।

রিচার্ডসনের মতে, “এই সংকট থেকে উত্তরণে হাইতির রাষ্ট্রযন্ত্রের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জোরালো সহায়তা প্রয়োজন।”