জোবাইদা রহমানের ৫৮৭ দিনের আপিল বিলম্ব মার্জনা করলেন হাইকোর্ট

জোবাইদা রহমানের ৫৮৭ দিনের আপিল বিলম্ব মার্জনা করলেন হাইকোর্ট

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের তিন বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য ৫৮৭ দিনের বিলম্ব মার্জনা করেছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (১৩ মে) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আসিফ হাসান। পরে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানান, দীর্ঘ ৫৮৭ দিন সময় পেরিয়ে গেলেও আপিল দায়েরের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন ডা. জোবাইদা রহমান। আদালত তার আবেদন গ্রহণ করে বিলম্ব মার্জনা করেছেন। এখন তিনি বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন।

২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তারেক রহমান, জোবাইদা রহমান এবং তার মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দাখিলের পর দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে আদালত তারেক রহমানকে দুটি অভিযোগে মোট ৯ বছরের কারাদণ্ড দেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন ২০০৪-এর ২৬(২) ধারায় তাকে ৩ বছরের এবং ২৭(১) ধারায় ৬ বছরের কারাদণ্ডসহ তিন কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। একই মামলায় জোবাইদা রহমানকে ২৭(১) ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

রায়ের পরপরই সরকারের পক্ষ থেকে জোবাইদা রহমানের দণ্ডাদেশ স্থগিতের বিষয়ে আবেদন করা হয়। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। ১০ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে গেজেটে প্রকাশিত ওই প্রজ্ঞাপনে জোবাইদা রহমানের সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়, যেন তিনি আপিলের জন্য প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেন।

দীর্ঘদিন যুক্তরাজ্যে অবস্থানের পর চলতি বছরের ৬ মে দেশে ফেরেন ডা. জোবাইদা রহমান। দেশে ফেরার পর তিনি দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে সক্রিয় হন। এই প্রেক্ষাপটে হাইকোর্টে দায়ের করা তার বিলম্ব মার্জনার আবেদনের শুনানি শেষে মঙ্গলবার তা মঞ্জুর করেন আদালত।

আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, “আদালত যেহেতু বিলম্ব মার্জনা করেছেন, এখন জোবাইদা রহমানের জন্য আপিলের পথ উন্মুক্ত হলো। তিনি বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন এবং আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন।”

এই মামলাটি বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা উল্লেখযোগ্য মামলাগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। জোবাইদা রহমানের আপিলের রায় দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।